UNPUBLISHED BENGALI POEMS WRITTEN BY SRI ANIRVAN
অস্ত শিখা
শ্রী অনির্বাণ
ব্রম্হপুত্রের দিগন্তবিথার বালুচরে
ফাল্গুনের ক্ষ্যাপা ঝড় শ্বসিয়া চলেছে হাহাস্বরে I
আকাশের নীলিমারে ঢাকি মূর্ছাহত রৌদ্রের কুয়াশা
বিছায়েছে পান্ডুর শয়ন,দিক হারা সর্বনাশা I
দুরতপ্ত পৃথিবী ইআর চ্ছন্নছাড়া উদাসী দ্যুলোক,
প্রমন্থন মৃত্যু আলিঙ্গনে বুজিয়াছে চোখ ------
ফেনিল বন্হির স্রোত শিরায় -শিরায় I
বনানীর রুক্ষ - জীর্ণ পাত্রের মর্মর ছায়
সকল চেতনা,-
নি:সঙ্গ রুদ্রের বুকে গুমরিছে রুদ্ধশ্বাস বৈচিত্ত্য বেদনা I
অদিতি,
শ্মশান সঞ্চর তোমার ভৈরবে, কোন শূণ্য হতে ডাক দীপঙ্কর স্বরিতের কী যে মন্ত্ররবে
তোমার ধুসর বক্ষে অস্তিত্বের চিতাধূমে রচিয়া অ- লোক-,
কাল যেথা পরাহত, পরাহত জীবনের ক্ষণদীপ্ত মূড় হর্ষ- শোক,
শুধু সেথা জ্বলে
পঞ্চশর দহনের রুদ্রদাহ ভৈরবীর পাঁজরের তলে I
তোমার সে অনল- আসবে
অনির্বাণ তৃষা জাগে নীল কন্ঠে; বসন্তের মদির উত্সবে
দুপায়ে মাড়ায়ে
ক্খিপ্তের তাণ্ডব চলে -ক্রন্দসীর কুন্ডলী ছাড়ায়ে
দুর্দামের দৃপ্ত অভিযান
মহাশ্বেতা -বক্ষলীন বীণা তন্ত্রে ঝংকারে আহবান
কুলহারা মরণের :
চির বিস্মরণের
পর:কৃষ্ণ দীপালোকে অলকার প্রনয় - আরতি
যক্ষের উন্মনা বক্ষে নিথরে নামায় ক্ষীর- নীর - সুরতের
নিস্পন্দ নিরতি I
অদিতি ,
ক্ষণেকের স্ফটিক বিন্দুতে
সম্ভুতির ইন্দ্রধনুচ্ছায়া টলে ;আনন্ত্যের অতল সিন্ধুতে
প্রবাল- স্বপন কাঁপে -অনাগত দূরান্তের অরুণ আভাস I
চিনি তারে; তবু আজি তাহার আশ্বাস
বন্ধ্যা হলো দ্বিদল- ইন্দুতে I কালের পসরা
শীর্ণ হলো ভ্রুমধ্যের বিদ্যুত- বিন্দু তে I মরণের স্বয়ম্বরা
রুদ্রানীর অতনু বন্ধন
অনাহত অন্তরীক্ষে উচ্চ্বাসিত করি তোলে নিগুড় ক্রন্দন
আমার আলোর লাগি I
উদাসী শাম্ভবি দৃষ্টি অপলক রহে শুধু জাগি:
বিভূতি ধূসরস্তনী তপতীর বক্ষের পরশ
চেতনার মর্মে কবে নি:শব্দে বিছায়ে দেবে ধূপছায়া মরণ- রভস I
_________________________________
রুপায়ণ
শ্রী অনির্বাণ
মহাশ্বেতা,
দ্যুলোকের আলোকের চলোর্মি -দোলায়
সহস্রার -পদ্মাসনে নিষন্ন নিশ্চল--
ভ্রু মধ্য - নিথর তব উন্মনী আকূতি
জ্যোতির রোমাঞ্চে আজি মুক্তি দিল বুঝি
ধ্যান -ছন্দ বাহী কোন অকূল বিস্ময়ে I
হে চিন্ময়ী,
অবর্ণের বর্ণরাগে ক়ে আজি রাঙালো
চিরমৌন তুষারের স্বপ্নছবি - আঁকা
অরূপের অমাঘন তোমার আকাশ:
তাহারই আরতি
জ্যোতি:স্বনা তোমার বীনায় ----------
বৈরাজ -সামের ছন্দে
ঝন্কারিল অনাহত আনন্দের অশ্রুত রণন I
আমি মহাকাল --
সূরচক্ষা চেতনার বিদ্যুত-নিমেষে
করি অনুভব প্রথম ধর্মের সেই গভীর বেপনে:
তোমার সে -প্রচিতির সুর মূর্ছনাতে
টলমল অতনু ব্যোমের তনু;
জাগে প্রাণ - হিরন্ময় ছন্দনির্ঝরণ ,
অহনার কল্পলোক মুগ্ধ আঁখি মেলে;
দ্যুলোকের মূর্ধা হতে
ঝরে পড়ে অরূপের রূপের পিয়াসা
উচ্ছলিত সিন্ধুর কল্লোলে;
তার ই আবর্তনে
রৈবতক -সামের স্মরণে
ত্বষ্টা রচে অপ্সরার মায়া--
অমর্ত্যের কল্পনারে বন্দী করে মর্ত্যের গহনে I
চেয়ে আছি বাক্যহারা:
অরুপারে হেরি সম্পুটিত রূপের কোরকে ;
জ্যোতির ইন্গনে তার মর্মবৃত্তান্ত বাহি '
অজানার স্পর্শে জাগে চিত্রানীর ব্যাকুল এষণা;
সুপর্নী সে উড়ে চলে অন্তহীন ব্যোম সন্তরিয়া,
দুরে- আরো ও দুরে -দুর্নিরীক্ষ্য আর ও দুরান্তরে.........
আবার সে ফিরে আসে
ঋতের সদন মাঝে,
অচঞ্চল স্ব্ধার নিলয়ে I I
___________________________________
আদিম অরণ্য
শ্রী অনির্বাণ
দিন শেষে আকাশ বাসরে
আমারে নিয়েছে টেনে তোমার হৃদয়ে
অচ্ছদের জল যেথা করে টলমল
রেশমী জ্যোছনার ফেনায় কোমল
যুগল কমল ঘিরি I
দোপাটি রঙিন চুমার -চৌম্বক টানে
অকারের কায়কল্প সেথা - অস্নাবা অব্রণ I
ছিলে তুমি , ছিল ভালবাসা
তাই আমি আছি:
ম্যাডোনা মেরীর বুকে শিশু যিশু: আর
স্বপ্নের আবেশে কম্প্র
উশতী মেরীর বাহুর বেষ্টনে
অন্তিম প্রহরে বন্দী বঁধু অনুপম I
ক়ে যে কারে রূপ দিল --------
আজ ও তা জানি না I
শুধু জানি
বিশাখা মেরীর ভালবাসা
জননী জায়ার আদিম অরণ্য I
__________________________________
পত্রলেখা
অনির্বাণ
কাল প্রদোষচ্ছায়ায় ওপারের পত্র লেখা এল
নববর্ষের সূচনা নিয়ে I
আমার অঙ্গনে তখন রবাহূতের ভিড় :
তাদের বিদায় করে
নিশীথের নির্জনতায় উন্মোচন করলাম তার বুকের কথাটি I
অজানার পথে উন্মনার দুঃ:সাহসিক অভিযান:
মর্ত্যের ধূলিতে ম্লান ধূসর অভিযানের কথা আমি ভাবছিনা,
ভাবছি অন্তহীন আকাশের বুকে
একটি জ্যোতিষ্ক - যাত্রীর মিলিয়ে যাবার কথা I
অশ্রুর কোমল বাষ্পে ছেয়ে গেল মন -
এক অপরূপ জ্যোত্স্নার ঝিলিমিলিতে করুন হলো অন্তশ্চেতনা,
তার গভীরে ফুটল মণিমালার স্ফটিক স্বচ্ছ তরঙ্গের দোদুল বিদ্যুত........
ভুলে গেলাম-
মহানগরীর পুরুভুজ লুব্দ্ধতার বন্ধনে বন্দী আমি,
আমাকে ঘিরে অভাবী জনতার স্বেদাক্ত সান্নিধ্যের ক্লিন্নতা:
ঘরের সংকীর্ণ দেয়াল গুলি মিলিয়ে গেল
বৈশ্বান্তিক জ্যোতির্বাশ্পের অস্ফুট ধুমলতার মধ্যে ................
এক মধুর নি:সঙ্গতার মায়া পরিব্যাপ্ত হলো চেতনার দূর দিগন্তে-
তার মধ্যে স্তব্দ্ধ হয়ে বসে আছি আমি আর তুমি :
তুমি বিদেহী , আমি অরূপ I
রাত্রি গভীর হলো ,
মর্ত্যের বেদনা তখন ও চিক চিক করছে বিনিদ্র নয়নের কোলে,
মুমূর্ষু যুথিকার ক্লান্ত সুবাসের মতো II
চাক্ষুশী
অনির্বাণ
সূর্য মিলায় I
আর তারই SATHE সাথে
আঁধারের সূচিকা ভরণে
মানসের নীল জল কালো হয়ে ওঠে I
এই তবে শেষ?
মানসের নীল তা মানে না I
তার দৃষ্টি গেছে - যায় নি তো সৃষ্টির তিয়াসা:
তাই তার কনীনিকার অতলে,
অজানার সন্কর্শনে অদ্যতে বিদ্যত কাঁপে
প্রদ্যতের স্বপ্নে থর থর
কুহুর কুহরে যেন রাকার দেয়াল I
___________________________________
মানসী
অনির্বাণ
আবার সূর্য ডুবল :
অস্তিত্বের পক্ষাঘাতে নি:সার চেতনা I
তবু দেখো আকাশের ধূসর সৈকতে
নক্ষত্রের অভ্র কণা এখানে ওখানে ?
নীহারিকা পাঠায়েছে বুঝি ফর নি:স্বর আহবান
অসাড়ের বুকে তার ই সাড়া এ কি ?
হৃদয় তো নাই I তবু কেন সরিসৃপী বেদনার এই কিলি বিলি I
অপ্রকেত গহন গভীরে
কিছু ই ছিল না ঋষি তবু কাম ছিল -
যারে তুমি বল -
'মনসো রেত:প্রথমাং যাদ অসীত I
তুষারের কৌমারী সিতিমা
সন্চয়িলো প্রাজাপত্য সূর্যের কামনা আমার কুহরে:
নিরুদ আবেগ তার
মানসের নীল জলে করে ছল ছল
শুচিসাত হংস নেমে এলো
সে সায়রে পদ্মার সন্ধানে I
কারে খোঁজ ? কেউ কথা নাই I
আপ্তকাম স্বাধিতির তমস্বী গহ্বরে
পরাধ আলোকবর্ষ পার হয়ে যায় -
তবু আশা নাই, প্রাযোতির
ভাষা ও যে নাই I
কিন্তু ও কি ! নিকষিত সোনার লিখন
ফুটল কখন, কেউ তা জানে না
স্বধার গহনে ডুবি
আপনারে ছুঁয়ে বুঝি রোমাঞ্চ জেগেছেI
ঝিলিমিলি বিদ্যুত - পলকে
প্রচ্ছুরিতকামনার আভা শুধু তায় -
ছুঁতে গেলে মিলায় চকিতে I
হায় মরীচিকা I
দ্বিদল দ্বন্দ্বের দৃষ্টি নিবর্তিয়া তাই
ভ্রুমধ্য - অতলে রচে
"দিবীব চক্খুরাততম I "
সুতনু - তনিমলেহা সে চোখের অতনু তিয়াসা
শতরুপা বর্ণালীর কল্পনে উদাস I
সব মায়া I আহা তবু মনোরমা I
অধরারে পেতে চাও ?
সে পাওয়ার রেখ নাই, তিয়াসার তৃপ্তি নাই I
তবে সূর্য মিলাক I
আর তার ই সাথে সাথে আঁধারের সূচিকা ভরণে
মানসের নীল জল কালো হয়ে যাক I
__________________________________
বিপ্লব
(অ প্রকাশিত কবিতা )
অনির্বাণ
রোদ উঠেছে এতদিনের একটানা বর্ষণের পর I
এলোমেলো হাওয়ার অন্তরিক্ষ
আশা -আশংকার মধ্যে দোল খাচ্ছে যেন -
আবার যদি মেঘ ঘনিয়ে আসে I
আসুক I একদিন যে আমি থাকব না -
এই কথাটা আজ প্রসন্ন আকাশের স্মিত হাস্য হয়ে
ছড়িয়ে পরেছে সারা মনে I
সেই না- থাকা কি তোমাকে হারানো,
না তোমার মধ্যে হারানো, কাজল ?
ও দুটাই সত্য I
আমি নাই আমি আছি , আমি আছি আর তুমি আছ,
আর আমরা আছি, বলে সবাই আছে -
এই চতুস্কটির বাইরে আর কি থাকতে পারে ?
জানি , সবার থাকাটা একটা ঝামেলা I
শুরু হবে রেষারেষি, হানাহানি, চায়ের পেয়ালায় তুফান তোলা I
কিন্তু তাকেই বা ভয় করি কেন ?
শিয়রে হিমাচল, পায়ের তলায় সমুদ্র -
বুকে গঙ্গা আরে পদ্ম যুগলহার I
তুমি কি অপরুপা, কাজরী I
উঠুক ঝড়, নামুক বাদল - তোমার মধ্যে গুটিয়ে গিয়ে বলব,
আমি কিছু ই জানি না, কিছু ই মানি না, জানি কেবল ভালবাসতে I
রক্ত বীজের চোখ লাল করে বলবে,
'দাঁড়াও না, তোমার বুর্জোয়া মেন্টালিটির মজা বের করছি I
আমি কিছুই বলব না ওদের I কি করে বোঝাব -
ওরে দুর্ভাগা , তোরা যা করতে চাস, তা ভালোবেসে ও করা যায় I
ভালবাসার মতো দরাজ বুক তোদের নাই,
তাই অত হাঁউ মাউ করছিস I ' বিপ্লব, বিপ্লব'----
ঝড়ের বিপ্লবটাই সত্য , আলোর বিপ্লব বুঝি কিছু নয়,?
থাক তর্ক কাজরী I যাবার আগে দুনিয়ার সব কোলাহল থেকে
ছুটি নিয়ে, তোমার বুকে মুখ গুঁজে শেষ নি:শ্বাস ফেলে বলে যাই ----
পৃথিবীর কল্যাণ হোক ঝড়ের বেসবুর হতাশ্বাস
মিলিয়ে যাক প্রশান্ত- প্রসন্ন আকাশের উদার নীলিমায় I I
__________________________________
স্বাহাকৃতি
অনির্বাণ
আপুর্যমাণ অচলপ্রতিষ্ঠ চেতনা !
অরংকৃতির আকর্ষণ পরিধিকে গুটিয়ে আনছে
সুষুম্ন -তন্তুতে গাঁথা মনিবিন্দুর সন্ততিতে !
শুভ্রু অগ্নিস্শিখার তপতী আকূতি জ্বলছে তার পর্বে পর্বে -
'জ্যোতিরিবাধুমক:'
'নিবাত নিষ্কম্প :'........
এক গভীর আহুতি ---
কৈশিকীর সর্পিল বিদ্যুতে ঝঙ্কৃত বৈশ্বানরের স্বাহামন্ত্র :
'হৈমবতি আবির, আবির ম এধি !'
সাড়া এলো দিগন্তের ঢেউ খেলানো পরিভূ প্রানের সমুদ্র হতে :
'এই যে আমি '..........
হিরন্য গর্ভের উত-সর্পিণী ভাবনার নিরুদ্ধ বেদনায়
কাঁপছি তোমার সত্তার গভীরে ....................
তোমার অশ্রু -থর থর বাষ্পল চেতনায়
এই যে আমি
অরুন্ধতি উষার হৃদয় - ছাওয়া কেতকী কোমল আভা :
আনি উদ্যানের জয়ন্ত আশ্বাস ,
এলিয়ে দি ই তোমার অন্তর হৃদয়ের নি:শব্দ আকাশে !
বৈশ্বানর,
আমি যে তোমার স্বপ্ন স্বয়ম্বরা স্বাহাকৃতি !'
ঘুচলো আড়াল !
তৃষার অনুর জ্যোতিরনুতে
এ কী উদ্বেলিত সমুদ্রের নিথর কল্লোল !
কোথায় আমার চাওয়া ?
দেখছি ,
হৃদয়ে - হৃদয়ে আমারই আকূতি অগ্নিনাগিনী
বিদ্যুজ্জিহ্ব লেলিহায় লেহন করছে
মহাব্যোমের রিক্ততাকে !
তৃনান্চিত পৃথিবীর রোমাঞ্চে শুনি
কোন বিরহিনীর ব্যাকুল কন্ঠস্বর :
' ও গো বৈশ্বানর ,
ওগো অগস্ত্য -চেতনার প্রলয়ী তৃষা,
আর যে পারি না.....
আমায় টেনে নাও .....টেনে নাও তোমার অস্পর্শ
অরূপ সত্তার অতলে !'
স্তব্ধ বৈশ্বানর
'নিবাত নিষ্কম্প :'.............................
'জ্যোতিরিবাধুমক:'................
চকিত বসন্তের স্বপ্ন ভঙ্গে
কত যে কিশোরী -চেতনার আবেশে -বিবশ শিহরণ
অরের মত সমর্পিত হয়ে আহে
একটি আদিত্য হৃদয়ের ধ্রুব দ্যুতিতে !
শুধু প্রসন্ন দৃষ্টিতে চাওয়া তাদের পানে,
শুধু এক নি:শব্দ মধুর স্বীকৃতি ,
শুধু বামদেব্য সামচেতনার এই অজপা :
'ওম আয়াহি !'
আপ্তোকামের প্রত্যাহরণে
মুগ্ধা প্রকৃতি লীন হল উন্মনী চেতনার মনিকূটে-
ব্যাপ্ত অহল জগন্ময়
অস্পর্শ -অশব্দের গভীরে নিশ্বসিত
এক হৈমন্তী নিরতির হিরন্ময় মুর্চ্ছানা
'ওগো কোথায় আমি .......
'আমি তো নাই .......'
_____________________________________________
অনিমেষ
অনির্বাণ
আজ তিনটি দিন ধরে ,অচলসুতা ,
কজের ফাঁকে -ফাঁকে মুখ তুলে দেখছি -
ওই আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে
অতন্দ্র নয়নে তাকিয়ে আছ
কোন সুদূরের প্রতিচ্ছবির পানে I
দুটি কুবলয়ের নিস্পন্দ নিতলে
মন্থর হেমন্তের নীলাভো রৌদ্রের রোমাঞ্চে যেন
স্বপ্নের চূর্ণরশ্মি- ছড়ানো রহস্যের নির্বাক আমন্ত্রণ I
নিঃসুপ্ত আমার মৃদুশ্বসিত আঁধারে ও
সর্বাঙ্গে বুলিয়ে চলছ তোমার সজাগ দৃষ্টি I
মুখ ফুটে একটি কথাও বলছ না -
বিবসন বুকের জ্যোছনা
রিক্ততার ধূসর বুকে
কবোষ্ণ সোহাগে লুটিয়ে পরছেনা একটিবারও I
স্ফিন্কসের নৈশব্দ্য়ে হিমেল
এ কী দুঃসহ অপলক তোমার চেয়ে থাকা I
চেতনা নিঃসাড় হয়ে আসে মৃত্যুর নেশায় I
সেইই নিঝ্ঝুম মুর্চ্ছনে
ভয়াল নাস্তিতার গভীর তন্ত্রে ক়ে যেন হানে
নির্মম বঞ্চনার কর্কশ ঝন্ঝনা :
'ম্যায় ভূকা হু 'I
কিন্তু তোমার বুভুক্ষু প্রানের লোলজিহ্বা সৃক্কনিলেহন
এই অতৃষ্ণ নিরতির নির্বেদ- মেদুর ললাটে
শিথিল সঞ্চারে নেমে আসে
তুষার মৌনের বুকে উষার যেন রাঙা চুমা I
পরিনির্বানের অপ্রকেত কুহরে
মৃত্যুর ও মরণ হয়
আকাশগঙ্গার দুরান্ত অনালোকে অনুচ্ছল আলোর বন্যায় I
বুঝি বুভুক্ষার নিষ্ঠুর তাড়ন
কোন দেব্গন্ধর্বের মৃদুল ছোয়ায়
লজ্জায় মিইয়ে পড়ে
সদ্য -চোখ -মেলা -ভালবাসার কমল মিড়ে I
তখনও তুমি নিঃশব্দে তাকিয়ে আছ
দূর -দিগ বলয়ের বিদিশা শূণ্যতার পানে I
আর তোমার রহস্য নীল সেই দৃষ্টির গভীরে
কী নিবিড় আশ্বাসে কাঁপছে
বিবাগী পূরুরবার
দুকুলহারা ব্যাকুল চাওয়ার দুটি রঙিন পাখা I
তারপর ,
নৈরাত্ম্যের পীতাভ -পান্দুরে পড়ল কি
আনমনে -ভেসে -আসা- সজল মেঘের
একটুখানি কাজল ছায়া ?
অভ্রত্তরণ সাম্পরিশ্বন্গের নীহারে প্রাবৃত
যুগনদ্ধ সুমেরুতন্ত্রে কি ঝিলিক হানলো
অনঙ্গ সুরতবন্ধের বিদ্যুত রিমঝিম ?
তার অকিন্চান্যা নিরায়তনে
তোমার অমা -তনিমার কৌষেয় - বিভ্রম বুঝি
অতর্কিত পূর্বরাগের অভিঘাতে থরথর I
তার প্রসন্ন সুস্মিতে অনামা ভুবনের অরুন স্বপ্ন
ঝরে পরছে ইন্দ্রনীল -ললাটিকা রহ্স্য বঞ্চনায় ঝিলমিল I
তার বিপাশা জ্যোছনার ফেনিল মায়ায়
শিলীভূত নির্ঝরের সুপ্তির কুলে
অরুন্ধতী অস্তিতার ক্ষনভঙ্গী লাস্যের ছন্দ যেন টলমল I
তবুও তুমি অতন্দ্র নয়নে
তাকিয়ে আছ যে কিসের পানে I
তোমার পলকহারা দৃষ্টির বিদ্যুচ্চকিত উল্কারেখায়
খুঁজে পাই নচিকেতা অভীপ্সার রহস্যকুঞ্চিকা --
অনুত্তারার অন্তশ্চ -অন্চার দিব্যক্র্তুর অবন্ধ্যা ইশারায় I
অনেক ব্যর্থতার অনেক মৃত্যুর উত্তাল গর্জন ছাপিয়ে চলেছে
অস্তি আর নাস্তির মিথুনে প্ররোহী
মহাজীবনে অশ্রান্ত উত্তর অয়ন I
মুহুর্তের তরে
ধু -ধু -দিগন্তের উপান্তে ভেসে ওঠে
তোমার কিশোরী আকূতির তাম্রপর্নী প্রচ্ছায়া
অজর সবুজের সঙ্কেতে শবলা I
আরো .....আরো .....দুরে ......
দিবদুহিতা অহনার সুনীল নয়নে
সদ্য ঘুম ভাঙ্গা দৃষ্টির কূলে
অজানা -জানায় অনির্বচনিয়ের মুগ্ধ বিস্ময় Η
তোমার নয়নে তবুও নিমেষ নাই II
____________________________________
দুঁহু মন
অনির্বাণ
'দুঁহু মন মনোভাব পেষল জনি ' :
এই শেষ সত্য, রেখা --
বিগলিত মরণের রোমহর্ষণ রভসে I
এই শেষ .....
তবু ও সে অনাদি ...... অশেষ ....
কিঞ্চিত - পরিলুপ্ত ধৈর্যের বাঁধন
উর্বশীর কবরীর বিস্রস্ত সৌরভে বুঝি টলমল :
উদ্ভ্রান্ত ভ্রূমর তাই খুঁজে ফেরে
আধফোটা কমলের লজ্জারুণ মধুর বিভ্রম I
অকস্মাত কেটে যায় কুয়াশার ঘোর I
রংছুট আকাশের প্রসন্ন ছোঁয়ায়
ঝিরিঝিরি হৃদয়ের মদির কাঁপন
রাসটানা আকুতির নির্বেদে শিথিল I
জোত্স্না স্নাত সিলেটের সম্মুগ্ধ বিতানে
চেয়ে দেখি রূপ ধরে অচ্ছদবসনা একটু - বিরাগী
মনের তুলির টানে I
তোমার অনঙ্গ
আসঙ্গের নির্বাক ইশারা তবু
বিদ্যুটতে চকিত I
সারাদিন তারা ঘিরে
ভ্রমের গুনগুন,
সরসর নারিকেলশাখার দোলনে
বাতাসের দীর্ঘ শ্বাস , পাপিয়ার দীর্ণ কন্ঠে
রতিবিলাপের ঢেউ- ওঠাপড়া.........
তারপর বেলা ডুবে গেলে
ঘুচে যায় সকল আড়াল , রেখা :
চোখ মেলে -চেয়ে -থাকা অবুঝ পিপাসা
অতনু -তরঙ্গ ভঙ্গে
বুজে আসে বুকের সুতলে
পাওয়ার কি গভীর সুখে I
সব -ছাওয়া
আঁধারের অকূল অতল, আহা
দুঁহু মন পেষল.....পেষল ...পেষল জনি --
ন হম রমণ, ন সো রমণী II
_______________________________________
দুঁহু মন
অনির্বাণ
'দুঁহু মন মনোভাব পেষল জনি ' :
এই শেষ সত্য, রেখা --
বিগলিত মরণের রোমহর্ষণ রভসে I
এই শেষ .....
তবু ও সে অনাদি ...... অশেষ ....
কিঞ্চিত - পরিলুপ্ত ধৈর্যের বাঁধন
উর্বশীর কবরীর বিস্রস্ত সৌরভে বুঝি টলমল :
উদ্ভ্রান্ত ভ্রূমর তাই খুঁজে ফেরে
আধফোটা কমলের লজ্জারুণ মধুর বিভ্রম I
অকস্মাত কেটে যায় কুয়াশার ঘোর I
রংছুট আকাশের প্রসন্ন ছোঁয়ায়
ঝিরিঝিরি হৃদয়ের মদির কাঁপন
রাসটানা আকুতির নির্বেদে শিথিল I
জোত্স্না স্নাত সিলেটের সম্মুগ্ধ বিতানে
চেয়ে দেখি রূপ ধরে অচ্ছদবসনা একটু - বিরাগী
মনের তুলির টানে I
তোমার অনঙ্গ
আসঙ্গের নির্বাক ইশারা তবু
বিদ্যুটতে চকিত I
সারাদিন তারা ঘিরে
ভ্রমের গুনগুন,
সরসর নারিকেলশাখার দোলনে
বাতাসের দীর্ঘ শ্বাস , পাপিয়ার দীর্ণ কন্ঠে
রতিবিলাপের ঢেউ- ওঠাপড়া.........
তারপর বেলা ডুবে গেলে
ঘুচে যায় সকল আড়াল , রেখা :
চোখ মেলে -চেয়ে -থাকা অবুঝ পিপাসা
অতনু -তরঙ্গ ভঙ্গে
বুজে আসে বুকের সুতলে
পাওয়ার কি গভীর সুখে I
সব -ছাওয়া
আঁধারের অকূল অতল, আহা
দুঁহু মন পেষল.....পেষল ...পেষল জনি --
ন হম রমণ, ন সো রমণী II
____________________________________
17 Sep
দুটি কবিতা
শ্রী অনির্বাণ
মোহনায়
রূপ আর অরুপের মোহনায় দাঁড়িয়ে আছি I
হৃদয়ের শুভ্র রিক্ততার কুহরে
কাঁপছে যে - স্বপ্ন সঙ্গিনীর মেদুর ছায়া ,
এ - পৃথিবীর বুকে সে যেন আজ থেকেও নাই I
ফাল্গুনী জ্যোত্স্নার ধারাসারে বাউল মন
শিথিল বন্ধনে অরুপাকে জড়িয়ে ধরেও
চায়না সে চকিত সৌরভ স্পর্শের রূপায়ন
একটুখানি রূপের আভাস
অন্তরের বন্হি দহনে বাষ্প তরল হয়ে
মিলিয়ে যাক দ্যুলোকের অফুরন্ত অন্ধকারে :
সেখানে
প্রকাশে বেদনায় রুদ্ধ শ্বাস প্রক্ষভে বিপ্লুত
কোন অব্যক্তের নির্মম পরিচয় ?
রহস্যের নীলাভ কুয়াসায় চেয়ে গেল আমার মন I
জীবনের উষার মরুতে
কোথায় পরম তাত্পর্যের অভ্রকনা ?
কোথাও নাই I
চরম পাওয়ার সুনিশ্চিত প্রত্যাশায় কি এনেছিল তবে
গতির সুষমা , চাঁদের দোলা ?
জানিনা I
বাউল হাওয়া অকারণ বইছে আলুথালু হয়ে I
বুদ্ধির শাসনে তাকে বাঁধতাম যদি, সে ই কি ধরত সত্যের রূপ ? আজ
শেষ কথাটা আর অজানা নয় :
এই হওয়ার - ই মতন শূন্যের বুকে ফুরিয়ে যাওয়া I
কিন্তু তার উপান্তে দাঁড়িয়ে
একটু মুহুর্তের তরে ও
অফুরানের ঘোমটা না খসাতে পারলাম যদি -
তবে ?
শক্ত করে তাকে ধরতে চাই এই মুঠির মাঝে ,
বুদ্ধির দেউটিতে ঘুরিয়ে - ঘুরিয়ে দেখতে চাই ,
চিনতে চাই তার কুটিল রহস্যের প্রত্যেকটি বাঁক I
তারপর ,
তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে চাই
আমার ওই নিশ্কৌতুহাল রিক্ততার ধুসর প্রত্যন্তে ...
বুকের ফাঁকায় নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসে I
এই যে পেয়েছি তাকে :
অবর্ন জীবনের প্রচ্ছদে
বিচিত্র বর্ণালী -লেখার প্রতানে
থেকে থেকে সুনীল মৃত্যুর কসি -
ধোঁয়া -ধোঁয়া মেঘের ফাঁকে -ফাঁকে
আকাশের অথৈ ইশারার মত I
বুদ্ধির এই খদ্যতিকাই
তামসী নীহারিকার অন্ধ অতলে জাগায়
দুঃসহ দ্যুতির বিস্ফোরণ I
তার সুতীখ্নো এষনার ইষিকায়
মর্ত্যের শ্রান্ত লালাতে সহসা ঝিকিয়ে ওঠে
অর্যামার বিদ্যুজ্জিহ্বা দৃষ্টির স্ফুলিঙ্গ -
ক্ষণিকার আলোয় ঝলক হানে অরুপের রহস্যরুপ I
তারপর ,
আবার সেই অজানার হাতছানি ,
বুক জুড়ে সেই পেয়েও- না- পাওয়ার ব্যাকুলতা ....
নিষ্ঠুর প্রেম বৈচিত্ত্যের সেই আতুর বিদ্রুপ I
এই কি তবে জীবনের উত্তরায়ন -
মরণের ম্ন্দাক্রান্তায় প্রবহন্ত প্রানের রূপাভিসার
রূপ আর অরুপের মযূর কন্ঠী মিতালিতে
অনাব্সান রহস্যের চমক শুধু !
তা-ই হবে II
________________________________
রাধার আকূতি
শ্রী মা
যখনি তুলিনু আঁখি ও- মুখের পানে,
জানিলাম,----
তুমিই আমার পরম দেবতা,
সব- ছাওয়া হে আমার সত্তার ঈশ্বর !
লও , ওগো লও মোর প্রানের আহুতি I
আমার ভাবনা যত, আমার আবেগ,
হৃদয়ের উল্লসিত যত রসালস ,
ইন্দ্রিয়ের যা - কিছু বেদন,
জীবনে যে ছন্দের স্পন্দন,
এ -তনুর প্রতি অণু,
ধমনীর প্রতি রক্তকণা.....
তারা যে তোমারই বঁধু, আমার তো নয় ......
তোমারি যে তারা !
অনিঃশেষে তোমার ই যে আমি ...
কেবলি তোমার.....
কুণ্ঠাহীন আত্মনিবেদনের ওগো তোমার ....
তোমার কি চাও আমার মাঝে ?
বল .... বল .....তা- ই হব আমি !
কিদেবে আমারে তুমি ?
মৃত্যু না জীবন , উল্লাস না শোক ?
সুখ দেবে ? দুঃখ দেবে ?
যা দাও আপন হাতে, ওগো বঁধু,
তা - ই আমি বুকে তুলে লব,
যা কিছু দাও না তুমি ,
দ্যুলোকের নির্মাল্য সে- আনিবে বহিয়া
এ - হৃদয়ে নিত্য শুধু ও নুত্তাম আনরভস ΙΙ
RADHA 'S PRAYER BY SHRI MA
Translated by SHRI ANIRVAN
___________________________________
কাজরী
শ্রী অনির্বাণ
সকালে কাজল মেঘে ঢেকেছে আকাশ I
জল ঝরে রিমঝিম I রুদ্ধ বাতাস
চাপা কান্নার ভারে ভারী করে তোলে
পাইনের বন I. পাখীরা সঙ্গীত ভোলে I
ঝিরিঝিরি বয়ে চলে ঝরণার ধারা
একঘেয়ে সুরে I. মন তো দেয় না সাড়া
কোন- কিছুতেই I কিছু করবার নেই ---
এলোমেলো ভাবনার হারায়েছে খেই
ধোঁয়া-ধোঁয়া মেঘের মিছিলে I.
কোথায় গেলে
বল দেখি ! আবছা -ছায়ায় ছায়া মেলে
শূন্যে মিলালে I. এদিক-ওদিক খুঁজি
পিয়াসী আঙুলে I. তারপর চোখবুজি--
হতাশায় নয় ওগো , ব্যথাতেও নয়. I
মনের ফাঁকায় নেই হারাবার ভয় -
নিঃশেষে জেনেছি , তাই স্বপ্ন শিথিল
চেরাপুঞ্জির ওই মেঘের মিছিল
ছুঁয়ে-ছুঁয়ে যায়. I ও- মেঘ চলেছে ভেসে
জানার অকূল হতে অজানার দেশে I.
উদাসী চোখের চাওয়া তারই সাথে চলে
মন্থর আলোর স্রোতে I
বেলা পরে ঢলে I.
কল্লোল শোনা যায় : ওই তো সাগর ......
ওই নীল থৈ থৈ -- কুলহারা মরন - বাসর I.
কাজল মনের মেঘ ওইখানে নামে,
বুকের নীরব ঝড় ওরই বুকে থামে II
__________________________________
14 sep
সৌর কলঙ্ক
অনির্বাণ
স্বাচ্ছন্দ্যের রোমন্থন রইল না জীবনে --
এ এক পরিত্রাণ, একটা আশীর্বাদ ;
চরম পাওয়ার আয়েস জড়ত়া আনল না কোনওদিন
এক নিরাসক্ত চাওয়া
শূন্যের মসৃন বুকে উঁচিয়ে রইলো কাঁটার মত--
'তারপর..............'I
এই যদি নিয়তি হয় ,
জয় হক সে নিয়তির I
করালিনীর কুটিল ভ্রুকুটিতে
দু 'খান হয়ে ভেঙ্গে পড়ুক বসন্ত সখার ফুলধনু
পাষাণীর কঠিন অশ্লেল্শ পাঁজর গুড়িয়া দিক
গুড়িয়া দিক এসব শিথিল চেতনায় ফেনিয়ে ওঠা
ক্লিন ভালবাসার আতুর স্বপ্ন I
নিষ্ঠুর উল্লাসে চর্বন কর মনের যত বিভ্রম
হে রক্তদান্তিকা,
কিছুরই কোন শেষ রেখোনা যেন I
থাক শুধু নিকিন্চন প্রলয়ের নিঃসীম তেপান্তর :
চোখ বুজে সব ফুরিয়ে দেবার আরাম নেই তার মধ্যে
আছে মধ্যাহ্নসুর্যের নিশ্চিত তিখ্নতায় ঝলসানো দৃষ্টিতে
এক অজানা রশ্মির চকিত আবির্ভাবের প্রত্যশা শুধু I
আর আনন্দের কাকলি থাক শিশুর তরে -
উদ্দীপ্ত যৌবনের কঠিন মুষ্টির পরে এলো
অনড় পাষাণ প্রকারের দ্বন্দ্বাহ্বান :
' বিলু চিদ আ রুজ 'I
Replies